শব্দ
পদার্থবিজ্ঞানে শব্দ হলো একধরনের কম্পন যা গ্যাস, তরল বা কঠিন মাধ্যমের সাহায্যে শব্দ তরঙ্গ হিসাবে সঞ্চালিত হয়।মানব শারীরতত্ত্ব এবং মনোবিজ্ঞানে শব্দ হলো একধরনের তরঙ্গের শ্রবণ এবং মস্তিষ্ক কর্তৃক এগুলো উপলব্ধি করা।[১] যেসকল শব্দের কম্পাঙ্ক ২০ Hz থেকে ২০ kHz কম্পাঙ্ক সীমার মধ্যে অবস্থিত, কেবল সেই শব্দই মানুষের মধ্যে শ্রবণ অনুভূতি প্রকাশ করে। সাধারণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে ও বায়ু মাধ্যমে এই শব্দের তরঙ্গদৈর্ঘ্য ১৭ মিটার (৫৬ ফু) থেকে ১.৭ সেন্টিমিটার (০.৬৭ ইঞ্চি)। ২০ k Hz উপরের শব্দ তরঙ্গগুলি আল্ট্রাসাউন্ড বা শ্রবণাতীত শব্দ হিসাবে পরিচিত এবং এগুলো মানুষের কাছে শ্রবণীয় নয়। ২০ Hz নিচে শব্দ তরঙ্গগুলি ইনফ্রাসাউন্ড বা অবশ্রাব্য শব্দ হিসাবে পরিচিত। বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণির শ্রবণসীমা বিভিন্ন হয়ে থাকে
তরঙ্গ হচ্ছে - যে পর্যাবৃত্ত আন্দোলন বা আলোড়নের সঞ্চালনের ফলে শক্তি এক স্থান থেকে আরেক স্থানে স্থানান্তরিত হয়। কিছু তরঙ্গ আছে যেগুলি সঞ্চালনের জন্য মাধ্যমের প্রয়োজন। আবার কিছু তরঙ্গ আছে যেগুলি সঞ্চালনের জন্য মাধ্যমের প্রয়োজন হয়না। এমনি দুইটি উদাহরণ হচ্ছে - শব্দ ও সূর্য থেকে পৃথিবীতে আসা শক্তি। শব্দ চলাচলের জন্য মাধ্যমের প্রয়োজন হলেও সূর্য থেকে যে শক্তি পৃথিবীতে আসে তা মাধ্যম ছাড়াই সঞ্চালিত হতে পারে। কেননা সূর্য থেকে পৃথিবীতে আসার সময় এই শক্তিকে এক বিশাল মাধ্যমহীন পথ অতিক্রম করে আসতে হয়।
তরঙ্গ (Sound)
কোন স্থিতিস্থাপক জড় মাধ্যমে বিভিন্ন কোণের সমষ্টিগত পর্যায়বৃত্ত কম্পনের ফলে মাধ্যমে যে আলোড়ন সৃষ্টি হয় তাকে তরঙ্গ বলে। যথা- লম্বিক অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ এবং আড় অনুপ্রস্থ তরঙ্গ। শব্দ এক ধরনের দৈর্ঘ্য তরঙ্গ। তরঙ্গ বেগ (V) = তরঙ্গ দৈর্ঘ্য (V) ⤫ কম্পাঙ্ক (f)
চাঁদে বায়ুমন্ডল নেই। তাই যদি চন্দ্রপৃষ্ঠে কোনো প্রচন্ড বিস্ফোরণ ঘটে তা পৃথিবীতে কখনও শোনা যাবে না। ভ্যাকুয়াম বা শূন্যের মধ্য দিয়ে শব্দ সঞ্চালিত হতে পারে না।
শব্দ
পর্থবিজ্ঞানে শব্দ হলো একধরনের কম্পন যা গ্যাস, তরল বা কঠিন মাধ্যমের সাহায্যে শব্দ তরঙ্গ হিসাবে সঞ্চালিত হয়।মানব শারীরতত্ত্ব এবং মনোবিজ্ঞানে শব্দ হলো একধরনের তরঙ্গের শ্রবণ এবং মস্তিষ্ক কর্তৃক এগুলো উপলব্ধি করা।[১] যেসকল শব্দের কম্পাঙ্ক ২০ Hz থেকে ২০ kHz কম্পাঙ্ক সীমার মধ্যে অবস্থিত, কেবল সেই শব্দই মানুষের মধ্যে শ্রবণ অনুভূতি প্রকাশ করে। সাধারণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে ও বায়ু মাধ্যমে এই শব্দের তরঙ্গদৈর্ঘ্য ১৭ মিটার (৫৬ ফু) থেকে ১.৭ সেন্টিমিটার (০.৬৭ ইঞ্চি)। ২০ k Hz উপরের শব্দ তরঙ্গগুলি আল্ট্রাসাউন্ড বা শ্রবণাতীত শব্দ হিসাবে পরিচিত এবং এগুলো মানুষের কাছে শ্রবণীয় নয়। ২০ Hz নিচে শব্দ তরঙ্গগুলি ইনফ্রাসাউন্ড বা অবশ্রাব্য শব্দ হিসাবে পরিচিত। বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণির শ্রবণসীমা বিভিন্ন হয়ে থাকে
শব্দের দ্রুতি (Speed of Sound)
শব্দ প্রতি সেকেন্ডে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে শব্দের গতি বা দ্রুতি বলে। বাতাসে শব্দের দ্রুতি সেকেন্ডে ৩৩২ মিটার। কঠিন মাধ্যমে (যেমন- ইস্পাত, লোহা প্রভৃতি) শব্দ সবচেয়ে দ্রুত চলে, তরলের মাধ্যমে (যেমন- পানি) তার চেয়ে ধীরে চলে। বায়বীয় মাধ্যমে শব্দের দ্রুতি সবচেয়ে কম আর ভ্রাকুয়াম বা শূন্য শব্দের দ্রুতি শূন্য। বিভিন্ন মাধ্যমে শব্দের বেগে ক্রম কঠিন > তরল > বায়বীয়। লোহার মধ্য শব্দ বাতাসের চেয়ে ১৫ গুন দ্রুত চলে। পানির মধ্যে শব্দ বাতাসের চেয়ে চারগুণ দ্রুত চলে। তাই কেউ পানিতে ডুব দিয়ে হাততালি দিলে সেই তালি শব্দ ডুবন্ত অবস্থায় থাকা ব্যক্তির জোরে শুনতে পাবে। অনুরূপভাবে, সমুদ্রের তীরে একটা বিস্ফোরণ ঘটলে এক কিলোমিটার দূরে সমুদ্রের পানির নিচে অবস্থানকারী ব্যক্তি একই দূরত্ব সমুদ্রের ভূমিতে অবস্থানকারী ব্যক্তির অপেক্ষার আগে শুনতে পাবে।
মাধ্যম
শব্দের দ্রুতি
লোহা
৫২২১ ./সে.
৭৫৭ মাইল/ঘন্টা
পানি
১৪৫০ মি./সে.
শুষ্ক বায়ু
৩৩২ মি./সে.
প্রতিধ্বনি (Echo)
কোন উৎস থেকে সৃষ্টি শব্দ যতক্ষণ দূরবর্তী কোনো মাধ্যমের কাছে ফিরে আসে তখন মূল ধ্বনি যে পুনরাবৃত্তি হয় তাকে শব্দের প্রতিধ্বনি বলে। এককথায় প্রতিফলিত শব্দকে বলা হয় প্রতিধ্বনি। কোন শব্দ শোনার পর প্রায় ০.১ সেকেন্ড পর্যন্ত এর রেশ আমাদের মস্তিষ্কে থাকে। এই সময়কে শব্দানুভূতির স্থায়িত্বকাল বলে। শব্দের প্রতিধ্বনি শোনার জন্য উৎস ও প্রতিফলকের মধ্যবর্তী দূরত্ব নূন্যতম ১৬.৬ মিটার হওয়া প্রয়োজন। শব্দের প্রতিধ্বনি ব্যবহার করে সমুদ্র ও কুয়ার গভীরতা নির্ণয় করা হয়।
শ্রাব্যতার পাল্লা এবং শব্দোত্তর ও শব্দেতর তরঙ্গ
Audibility rang and Ultrasonic and Infrasonic waves
উৎসের কম্পাঙ্ক ২০ HZ থেকে ২০০০০ HZ এর মধ্যে সীমিত থাকলে কেবল মানুষ তা শুনতে পারে। একে শ্রাব্যতার পাল্লা বলে। যে তরঙ্গের কম্পাঙ্ক ২০০০০ HZ এর চেয়ে বেশি তাকে শ্রাব্যতার তরঙ্গ বলে। আর কম্পাঙ্ক ২০০০০ HZ এর চেয়ে কম তাকে শব্দেতর তরঙ্গ বলে। কোয়াটজ ক্টিস্টাল অসিলেটরের এর মাধ্যমে শব্দ তরঙ্গের উৎপন্ন করা যায়। কোন কোন জীবন্ত আল্ট্রাসনিক শব্দ শুনতে পায়। যেমন কুকুরের শ্রাব্যতার উচ্চসীমা প্রায় ৩৫০০০ HZ এবং বাদুড়ের প্রায় ১০০০০০ HZ। বাদুড় চোখে দেখে না। বাদুড় চলার সময় বিভিন্ন কম্পাঙ্কের শব্দেতর সৃষ্টি করে। বাদুড় তার সৃষ্টির শব্দোত্তর তরঙ্গের প্রতিধ্বনি শুনে প্রতিবন্ধক এর অবস্থান এবং প্রকৃতি সমন্বয় ধারণা লাভ করে এবং পথ চলার সময় সেই প্রতিবন্ধক পরিহার করে।
ডপলার ক্রিয়া বা প্রভাব (Doppler Effect)
শব্দের উৎস শ্রোতার মধ্যে আপেক্ষিক গতি বিদ্যমান থাকলে শ্রোতার নিকট উৎস হতে নিঃসৃত শব্দের তীক্ষ্ণতা বা কম্পাঙ্কের যে আপাত পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয় তাকে ডপলার ক্রিয়া বা প্রভাব বলে। ডপলার ক্রিয়ার ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত তিনটি বিষয় বিবেচনা করা হয়-
ক) উৎস গতিশীল কিন্তু শ্রোতা স্থির
- উৎস শ্রোতার দিকে অগ্রসর হলে শব্দের কম্পাঙ্ক প্রকৃত কম্পাঙ্কের চেয়ে বেশি হবে।
- উৎস শ্রোতার থেকে দূরে সরে গেলে শব্দের আপাত কম্পাঙ্ক প্রকৃত কম্পাঙ্কের চেয়ে কম হবে।
খ) উৎস স্থির কিন্তু শ্রোতা গতিশীল
- শ্রোতা উৎসের দিকে অগ্রসর হলে শব্দের আপাত কম্পাঙ্ক প্রকৃত কম্পাঙ্কের চেয়ে বেশি হবে।
- শ্রোতা উৎসের থেকে দূরে সরে গেলে শব্দের আপাত কম্পাঙ্ক প্রকৃত কম্পাঙ্কের চেয়ে কম হবে।
গ) উৎস ও শ্রোতা উভয়ই গতিশীল
উৎস ও শ্রোতার মধ্যে আপেক্ষিক গতিবেগ না থাকলে কম্পনের কোন